
বাবা একজন সাধারণ মুদি দোকানি। মা গৃহিণীর কাজ করেন। সংসারে অভাব থাকলেও মেয়ের পড়াশোনার প্রতি সর্বদা সাহস ও প্রেরণা দিয়েছেন তারা। পরিবারের আর্থিক অবস্থা কখনোই স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না। তবুও থেমে থাকেনি ইয়াসমিন আক্তার পাখি।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম রায়গঞ্জ গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার পাখি। ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় আলহাজ মাহমুদ আলী বি এল বিদ্যালয় থেকে এসএসসি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়ে এই সাফল্য অর্জন করেছে সে। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে চিকিৎসক হতে চায় পাখি।
পাখির বান্ধবী সাথী আক্তার জানায়, পাখির স্বপ্ন অনেক বড়, কিন্তু সে কখনো অহংকার করে না। বরং আমাদেরও উৎসাহ দেয়। আর্থিক সংকটেও সে কখনো হতাশ হয়নি। টিউশনি পড়িয়ে নিজের খরচ চালিয়ে এভাবে লড়াই করা সত্যিই অসাধারণ।
ইয়াসমিন আক্তার পাখি জানায়, আমি টিউশনি পড়িয়ে নিজের লেখাপড়া করেছি। টিউশনি পড়িয়ে যে টাকা পাই তাই দিয়ে নিজের লেখাপড়া ও সংসারে কিছু খরচ দিতাম। বাবার মুদির দোকান থেকে কিছুটা আয় হতো, তাই দিয়ে চলতো। আমি একজন চিকিৎসক হয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই।
ইয়াসমিনের বাবা মো. আবুল কালাম বলেন, আমি মুদির দোকানি। আমার মেয়ে ৭ম শ্রেণি থেকে ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে পাড়াত। সেখান থেকে যে টাকা পেত, সেই টাকা দিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারে খরচ চালাত। মেয়ের ইচ্ছা ডাক্তার হবে। আমি তার লেখাপড়া করাতে চাই। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
আন্ধারীঝাড় আলহাজ্ব মাহমুদ আলী বি এল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, পাখি একজন মেধাবী ছাত্রী। সে জিপিএ ৫ পেয়েছে। যদি লেখাপড়া চালিয়ে যায়, তাহলে আরও ভালো করবে। আমি চাই তার আশা পূরণ হোক। আমাদের এবারের এসএসসিতে ১৪৭ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ২৪ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। ২৭ জন ফেল করেছে। আমরা চেষ্টা করবো আগামীতে আরও ভালো ফলাফল করতে।